এখনও তোমায় ভেবে
মরুঝড়ে এলোমেলো জীবনে এলো কত বিবর্তন
কত অনল - কত প্রহসন - কত আর নির্বাসন ?
বালি-ঝড়ে মুছে গেছে সে কবেই তোমার পদচিহ্ন
সৃতিরা আড়চোখে তাকিয়ে আজও অসহায় বড্ড ,
কেন তবে আর গহন হৃদয়ে এই বহ্নির দাবানল
মধ্য রাতে কান পেতে শুনা সুনসান বাতাসের কীর্তন ?
একাকী দাড়িয়ে এখনও মরু বৃক্ষ অকপটে এই মহাশূন্যে
ফণীমনসার বিষ কাঁটা এফোঁড় ওফোঁড় করেছে কত অনায়াসে ।
তোমার চোখের অঞ্জলি ছুঁয়ে কতকাল মেঘেরা ভাসে নি সুনীলে
ভাঙেনি মেঘের আরশি - আসেনি বৃষ্টি রিম ঝিম বরিষণে ,
তবুও পথিক প্রহর হেঁটে গেছে ঘড়ির কাঁটার বৃত্তের বলয়ে
নিথর নদী আর মন্থর সময় কখনও কি থেমে রয় বল নিরলে ?
কখনও ফোটেনি ফুল সোনালী বালির বুক চিঁরে
কখনও ভাঙেনি ভুল আর মনের কোনে দীপালী জ্বেলে ,
দেখনি ফিরে মনের ভুলে কিছু কি গেছ নাকি ফেলে
সুখের দিন গুলো নিয়েছ তুলে মায়া ভরা দুটি চোখে
দিয়ে গেছ নোনা জল চোখের আঁজলায় দুটি হাত ভরে ।
তবুও মনের ভুলে সাঁজাই ঢালী ফুলে ফুলে
তোমায় ভেবে বেদনার জল রঙে ছবি আঁকি আনমনে
এখনও তোমার নামে দ্বীপ জ্বেলে করি অর্চন গৃহ কোনে ।
নির্জন আহমেদ অরণ্য
ভাল আছি
ভাল আছি , ভাল আছি এইতো আছি , বেঁচে আছি
বুকের ভেতর দুঃখের নদী
একূল ওকূল ভাঙছে কেবল ভাঙছে কেবল নিরবধি ।
নীল খামের ভেতর ভালবাসার অক্ষর গুলো বন্দী করে
কত কাল লিখি নি তোমায় প্রেমের চিঠি ,
তোমার নামে বইয়ের ভেতর পাতার ভাঁজে
ভালবাসার নাম টি লিখে
তুলে রাখিনি শুঁকনো গোলাপ যতন করে ,
তবুও তো বেঁচে আছি , ভাল আছি , ভাল আছি ।
সহস্র বছর চোখের পটে আঁকি নি আমি তোমার ছবি ,
জেগে আছি কত নিশি একলা একা , একলা আমি
কেউ বলেনি জিরিয়ে নাও আমার ছায়ায় ক্লান্ত কবি , কেউ বলেনি ।
তোমার মতো চুলের ভাঁজে আঙুল নিয়ে কেউ খেলে নি
মুখের পরে অধর দিয়ে কেউ আঁকে নি রুদ্র ছবি ,
তবুও তো বেঁচে আছি , ভাল আছি ...
আমার ঘরে অন্ধকারে চাঁদ আসেনি জানালা দিয়ে
ফুল ফুটে নি বাগান জুড়ে ভোরের শিশির গাঁয়ে মেখে ,
ভালবেসে সুখী হয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে
চড়ুই জুটি ঘর বাঁধেনি আমার ছোট্ট নীড়ে ।
পথের পরে ধূলর সাথে হয়না দেখা এই নগরে
এখন আমি অন্য মানুষ হয়না কথা তারার সাথে ,
তোমার আমার গল্প করে এই শহরের মানুষ গুলো
পরনিন্দায় ব্যস্ত হয়ে কাটাচ্ছে না আর সময় গুলো ।
এইতো আছি বেস আছি ভাল আছি দূরে আছি ...
তোমার ঘরে সুখের রাশি , নাকের নোলক রেশমি চুড়ি
কাঁকন বালা , মুক্তো মালা দামী দামী রঙিন শাড়ি ,
নিসুত রাতে চাঁদের নদে নাও ভাসিয়ে গল্প করে
তোমার বুকে স্বপ্ন আঁকে এখন তোমার স্বামী ।
এই শহরে এই নগরে একলা আমি একলা পথিক
হাঁটছি শুধু হাঁটছি আমি বুকের ভেতর দুঃখ নদী,
ঘুণ পোকাদের মত কাটছে পাঁজর খাচ্ছে ব্যাধি
তবুও তো বেঁচে আছি তুমি হীনা , ভাল আছি ।
......:::: নির্জন আহমেদ অরণ্য ::::.....
বৃষ্টি এবং আমি
আজ বিকলটা অলস করে দিয়েছিল ঝুম বৃষ্টি
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম একমনে
মর্চে ধরা লোহার গ্রিল ছুঁয়ে অবিরল জলের ধাঁরা ...
জ্বলন্ত সিগারেটের ধূম্রজালে হাড়িয়ে যাই আমি
সেই ভেজা অতীতের অরণ্য গহীনে ।
যেখানে ফেলে এসেছিলাম সবুজ আর সবুজ আমার তারুণ্য _
আমার শৈশব , আমার কৈশোর , আমার ভালবাসার অরুন্ধুতি
মনে পরে জীবন খেয়ায় শুভঙ্করের ফাঁকি ।
তোমার মনের তটে আমার কাল্পনিক সুখের ঘর , আমার সংসার
জীবনের হিসেব নিকেশ আরও কত কি !
কিছুই হয়নি পাওয়া আজও , জানি স্বপ্ন গুলো আজ শুধু
আমার কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ ।
বৃত্তের বলয়ে আমার অনন্ত বসবাস , তুমি বিন্দু হয়ে
ঝরে গেছ নক্ষত্রের মতই ...
এখন আমার মনের চাতাল জুড়ে চৈত্রের রোদ
অলস দুপুর জুড়ে খেলা করে বিষণ্ণ প্রহর ... আর
তোমার আমার কাল্পনিক সংসারের অবক্ষয় ।
অথচ ,
অথচ... একদিন তুমি ছিলে ,এই মনে ভালবাসা ছিল
স্বপ্ন ছিল , দুচোখে ঘুম ছিল , সুখ ছিল ...
অঙ্গন জুড়ে বৃষ্টি ছিল , বাতাসে মিশে ছিল ভেজা কদমের গন্ধক ...
ভোরের ঘাসে ঝরে যেত শিশির মাখা শিউলি ফুল ,
আজ তুমি নেই , কিছু নেই , সুখ নেই , ঘুম নেই
আলিঙ্গনে নেই প্রিয় মুখ , বাতাসে নেই ভেজা কদমের গন্ধক
জীবনের হিসেবে শুধুই ভুল আর ভুল ...।
তবুও বৃষ্টি ঝরে সবুজ পাতা ছুঁয়ে , ভিজিয়ে যায় চাতক মন
শুধু তৃষ্ণা মিটে না , তৃষিত থেকেই যায় মন ।
....... :::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য :::::: .......
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম একমনে
মর্চে ধরা লোহার গ্রিল ছুঁয়ে অবিরল জলের ধাঁরা ...
জ্বলন্ত সিগারেটের ধূম্রজালে হাড়িয়ে যাই আমি
সেই ভেজা অতীতের অরণ্য গহীনে ।
যেখানে ফেলে এসেছিলাম সবুজ আর সবুজ আমার তারুণ্য _
আমার শৈশব , আমার কৈশোর , আমার ভালবাসার অরুন্ধুতি
মনে পরে জীবন খেয়ায় শুভঙ্করের ফাঁকি ।
তোমার মনের তটে আমার কাল্পনিক সুখের ঘর , আমার সংসার
জীবনের হিসেব নিকেশ আরও কত কি !
কিছুই হয়নি পাওয়া আজও , জানি স্বপ্ন গুলো আজ শুধু
আমার কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ ।
বৃত্তের বলয়ে আমার অনন্ত বসবাস , তুমি বিন্দু হয়ে
ঝরে গেছ নক্ষত্রের মতই ...
এখন আমার মনের চাতাল জুড়ে চৈত্রের রোদ
অলস দুপুর জুড়ে খেলা করে বিষণ্ণ প্রহর ... আর
তোমার আমার কাল্পনিক সংসারের অবক্ষয় ।
অথচ ,
অথচ... একদিন তুমি ছিলে ,এই মনে ভালবাসা ছিল
স্বপ্ন ছিল , দুচোখে ঘুম ছিল , সুখ ছিল ...
অঙ্গন জুড়ে বৃষ্টি ছিল , বাতাসে মিশে ছিল ভেজা কদমের গন্ধক ...
ভোরের ঘাসে ঝরে যেত শিশির মাখা শিউলি ফুল ,
আজ তুমি নেই , কিছু নেই , সুখ নেই , ঘুম নেই
আলিঙ্গনে নেই প্রিয় মুখ , বাতাসে নেই ভেজা কদমের গন্ধক
জীবনের হিসেবে শুধুই ভুল আর ভুল ...।
তবুও বৃষ্টি ঝরে সবুজ পাতা ছুঁয়ে , ভিজিয়ে যায় চাতক মন
শুধু তৃষ্ণা মিটে না , তৃষিত থেকেই যায় মন ।
....... :::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য :::::: .......
কথোপকথন
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কবিতা লিখা হবে না
কফির কড়া উড়ন্ত ধোঁয়া এসে নাসিকা স্পর্শ করবে না ,
অসতর্ক ভাবে মেঝেতে পরবে না জ্বলে যাওয়া সিগারেটের ছাই
খবরের কাগজে দেখা হবে না বর্বরতার কোন সংবাদ ...
সেই দিন শুধু আমাকে নিয়ে থাকব , আমার আমি আর আকাশ
খোলা জানালার পাশে অলস মনে আকাশের সাথে হবে আলাপন ।
আঃ হা , কত দিন আকাশ দেখা হয়নি , শুভ্র ধূসর আকাশ !
এর মধ্যে যদি জানালার গ্রিলে চড়ুই দুটি আসে ,বলবো
আজ আমি ব্যস্ত ,তোদের সাথে আজ সময় দেয়া হবে না
পেয়ালার চাউল টুকু খেয়ে কেটে পর ...
আজ শুধু আমি আর আকাশ থাকব মুখোমুখি দৃষ্টির আঙিনায় ।
খুব কি বেশি অভিমান আকাশ তোমার মনে ?
শুনেছি সেদিন নাকি কেঁদেছিলে তুমি অঝর ধারায় ...
জানই তো আমার দিনের আলো টুকু নিভে যায় অসম সমীকরণে
রাতের তোমাকে তবুও খুঁজি নক্ষত্রের দীপালিতে ...
আমাকে একটু সময় দাও সব গুছিয়ে নিতে , তার পর ...
তুমি আর আমি আর মুখোমুখি কথোপকথন ,
এইতো হাতেগোনা আর কটা দিন বাকি ।
নির্জন আহমেদ অরণ্য
.......::::: আরেকটি জন্ম চাই :::::.......
আমি আরেকটি জন্ম চাই এই জনমের পরে
আমার এই ব্যর্থ জন্মের দায় মোচনের তরে ,
আমি দুইটি জন্ম পেয়েছিলাম ভালবাসার জন্য
অথচ কেউ আপন হল না,অন্তত একটি জনমের জন্য ।
পাপ আর দুঃখে ক্রমেই আমি তলিয়ে গেছি দিনে দিনে
সংসার ধর্ম আর করা হল না কোন জনমেই ...
প্রেম হীন, সুখ হীন অভিশপ্ত জন্ম শেষে
আমি আরেকটি জন্ম চাই তৃতীয় বারের মত ...
আমি আরেকটি বার তোমাকে ভালবাসতে চাই
একটি সংসার ছোট সুখের দেয়ালে ঘেরা ,
এক জোড়া নূপুরের ছন্দ এ ঘরে ও ঘরে সারা-বেলা...
এক জোড়া চোখ , নীল দুটি চোখে স্বপ্ন ভরা ;
এক জোড়া চোখ অপেক্ষমাণ সাঁজের বেলা
এক থালা ভাত ধোঁয়া উড়ানো , দুইটি কাঁচা লংকা ।
খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই একটি সাভাবিক জীবন ছাড়া
একটি ছাদের নিচে তোমার ভালবাসা নিয়ে
পাশাপাশি দুজনে একটি সার্থক জন্মের ইতি টানা ...
গন্ধ হীন কাগজের ফুল,এ জীবনের যত ভুল
পাথরের শহরে দাসত্বের নির্বাসন শেষে একটি জন্ম চাই
ধর্ম , জাত নির্বিশেষে একটি মানুষ জন্ম ,
যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবেনা মানুষের মনে
তোমাকে চাওয়াতে সমাজের কোন সংবিধান লঙ্ঘন হবে না
তোমাকে ভালবাসতে কোন বাঁধা থাকবে না ,
মানুষের মনে বাসা বাঁধবে না কোন সামাজিক ব্যাধি কোন কালে ।
.......:::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য ::::::.......
আমার এই ব্যর্থ জন্মের দায় মোচনের তরে ,
আমি দুইটি জন্ম পেয়েছিলাম ভালবাসার জন্য
অথচ কেউ আপন হল না,অন্তত একটি জনমের জন্য ।
পাপ আর দুঃখে ক্রমেই আমি তলিয়ে গেছি দিনে দিনে
সংসার ধর্ম আর করা হল না কোন জনমেই ...
প্রেম হীন, সুখ হীন অভিশপ্ত জন্ম শেষে
আমি আরেকটি জন্ম চাই তৃতীয় বারের মত ...
আমি আরেকটি বার তোমাকে ভালবাসতে চাই
একটি সংসার ছোট সুখের দেয়ালে ঘেরা ,
এক জোড়া নূপুরের ছন্দ এ ঘরে ও ঘরে সারা-বেলা...
এক জোড়া চোখ , নীল দুটি চোখে স্বপ্ন ভরা ;
এক জোড়া চোখ অপেক্ষমাণ সাঁজের বেলা
এক থালা ভাত ধোঁয়া উড়ানো , দুইটি কাঁচা লংকা ।
খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই একটি সাভাবিক জীবন ছাড়া
একটি ছাদের নিচে তোমার ভালবাসা নিয়ে
পাশাপাশি দুজনে একটি সার্থক জন্মের ইতি টানা ...
গন্ধ হীন কাগজের ফুল,এ জীবনের যত ভুল
পাথরের শহরে দাসত্বের নির্বাসন শেষে একটি জন্ম চাই
ধর্ম , জাত নির্বিশেষে একটি মানুষ জন্ম ,
যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবেনা মানুষের মনে
তোমাকে চাওয়াতে সমাজের কোন সংবিধান লঙ্ঘন হবে না
তোমাকে ভালবাসতে কোন বাঁধা থাকবে না ,
মানুষের মনে বাসা বাঁধবে না কোন সামাজিক ব্যাধি কোন কালে ।
.......:::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য ::::::.......
...........::::::: ভালবাসার নির্জন সাক্ষর :::::::...........
তুমি ভোর হতে চাও , স্নিগ্ধ কোমল ভোর
তুমি ফুল হতে চাও , পাখিদের কোলাহল ,
অলির বুকে ভ্রমরের মধু-রেন গুঞ্জন
আমি'ই তো তোমার ভোর , নিঃস্বার্থ মনোরঞ্জন !
আলসে দুপুর জুড়ে থমকে থাকা সময় আর
কবিতার বইয়ে ওঠা ঝর , অথবা উতলা করা মন ,
আমাকেই পাবে তুমি বৃষ্টি স্নাত শিহরনে
আমাকেই ছোঁবে তুমি কল্পনায় তোমার চাঁপা দুটি আঙুলে ।
আসুক বিকেল তোমার অঙ্গনে হলুদের আবরণে
মৃদুমন্দ বাতাসে উড়ুক তোমার চুল তুলোর মেঘ হয়ে ,
লাল টুকটুকে সূর্যের টিপ তোমার ললাটে
আমি'ই তো অস্তমিত সূর্য , পশ্চিমের গগনে
ভালবাসার নির্জন সাক্ষর তোমার ওই ললাটে ।
শাঁখের ধ্বনি ম্লান করে নামে সন্ধ্যার নীরবতা
দিনের ক্লান্তি শেষে পাখিদের শুরু হয় ঘরে ফিরা ;
দীপালির আলো জ্বেলে তুমি একাকী পড়িসরে বুনে যাও
উলের মায়াবী নকশা ,
আমি'ই তো তোমার একাকী প্রহর , মনেতে সুখের স্পন্দন
তোমার'ই অন্ধকার ঘরে আলোকিত দীপ শিখা ।
নক্ষত্রের রাত এলে উঁকি দেয় তোমার মনের জানালাতে
এলোমেলো যত ভাবনারা এসে , আর তুমি-
সুনিপুণ দু হাতের কৌশলে চুলে বেণীর কারুকার্য যাও বুনে ,
আরশির বুকে তোমার ঘুমে জড়ানো অবয়ব থাকে ভেসে
যেমন করে আকাশের বুকে মেঘেরা থাকে মিশে ;
আমি'ই তো তোমার নক্ষত্রের রাত , আরশি হয়ে তোমাতে বিলীন
আমি'ই তো তোমার ঘুম ওই নীল দুটি চোখে ;
তুমি'ই তো আমার আকাশ , আমি নক্ষত্র হয়ে তোমাতেই আছি মিশে ।
..........:::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য ::::::..........
.............:::::::::::::::: তোমার জন্য ::::::::::::::::..............
ভালবাসা স্বচ্ছ জলের মত , হৃদয়ে অজানা অনুভূতি
তোমার আমার হাজারো জমানো ম্রিয়মাণ সৃতি ।
কখনো রোদেলা দুপুর কখনো বা বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি
আমি একুশ আর তুমি উনিশ কিংবা কুড়ি ।
তোমাতেই আমার যত সুখ , এত ভাল লাগা
আমার ভাবনায় , আমার কল্পনায় শুধু তোমারই কায়া ;
ক্লান্ত দুপুরে তুমি অরণ্য ছায়া , বন্ধনের শিকড়ে তুমি যেন মায়া
এইতো ভালবাসা , বল কখনো কি যাবে তোমায় ভোলা ?
কখনো আমি অবুঝ , তুমি চঞ্চলা
তুমি কখনো বা সবুজ আর আমি তিমিরের নিঃসঙ্গতা ,
এতটা ব্যবধান তোমার আমার কপ্লপনায় , তবুও
একটা আকাশ তোমার আমার , তোমাকেই ফিরে চাওয়া ।
আমার পৃথিবী তুমি , আমার ঘাস ফুল কবিতা
রঙে রঙে মনের ক্যানভাসে তোমারই ছবি আঁকা ,
অনন্ত প্রেম , তোমারই হেম আমারই হৃদয়ের প্রাণের স্পন্দন
তোমাকেই ভালবাসি , তোমারই জন্য আমার এত প্রহসন ।
..........::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য :::::.........
.....::::: অলস বৃষ্টি আর কিছুটা দীর্ঘশ্বাস ::::::.....
একবার বৃষ্টিতে আমরা দুজনে পাশাপাশি বসেছিলাম
মনে আছে তোমার ?
সেই চুন খসা পুড়নো বাড়িটার বারান্দায় ?
ভেজা সন্ধ্যা আর বিরতিহীন অলস বৃষ্টি !
তুমি কাঁচা লেবু রঙের শাড়ি পড়েছিলে
আর আমি , আমি পরেছিলাম আবছা নীল সার্ট ।
দুজনেই খুব মনোযোগ দিয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম
মর্চে ধরা গ্রিলের ওপারে অবিরাম বৃষ্টি ধারা...
আর মাঝে মাঝে আমাদের অমনোযোগী কণ্ঠে ছিল
অর্থহীন কিছু কথা দুজনার অজান্তে !
অথচ সেই দিন ,
কেউ কারো পানে তাকাই নি এক পলকের জন্য
একটি মুহূর্তের জন্যও দুই জোড়া হাত এক হতে পারেনি ,
বলা হয়ে ওঠেনি অনেক না বলা কথা
বুকের ভেতরে খুব গোপনেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল নীরবে ,
তুমি তার কিছুই জানতে পাওনি সেদিন ...
খুব অবাক হচ্ছ তাই না ?
ভাবছ এতদিন পরে কি মানে আর এসব মনে এনে !
আসলে-ইতো কি মানে আর এসব কথা মনে এনে ?
সেদিন বৃষ্টি থামতেই আমরা চলে এসেছিলাম
পিছু ফেলে এসেছিলাম একটি ভেজা সন্ধ্যা আর
এক বুক দীর্ঘশ্বাস ... বুঝি নি সেই দিন ;
এক দিন এই দীর্ঘশ্বাস টুকু'ই বুকের এতটা গহীনে থেকে যাবে
একটি ব্যর্থ সৃতি হয়ে , আর আমাকে পোড়াবে
অনন্ত কাল শীতল শ্রাবণের জলে !
.............::::::: নির্জন আহমেদ অরণ্য :::::::............
বৃষ্টি রহস্য এবং আমরা
সে বার যখন বৃষ্টি এসেছিল মুষল ধারায়
আমি বলেছিলাম দেখ আকাশের কান্না ,
কতটা কষ্টে আকাশ কাঁদতে পারে তা কি তুমি জানো ?
তুমি আমাকে থামিয়ে উচ্চস্বরে হেসে বলেছিলে
তুমি কোথায় দেখলে কান্না ? এ যে বৃষ্টি ,
প্রকৃতির এক অপরূপ অনাবিল সৃষ্টি ;
বোকা আকাশ কি কখনো কাঁদতে জানে নাকি ?
আমি চুপ করে জানালার পাশে দারিয়ে ছিলাম
বাহিরে তাকিয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম ,
কোন উত্তর দিইনি সেদিন তোমার প্রশ্নের ...
হয়তো সেদিন কোন উত্তর জানাবার ইচ্ছে ছিলোনা আমার ;
কিন্তু আমি জানতাম আকাশেরও কিছু কষ্ট থাকে
থাকে কিছু যন্ত্রণা , ক্ষোভে ,গর্জনে উন্মাদ হয়ে
এক সময় অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়ে কাঁদে ।
এখন তুমিও জানো , আকাশের কিছু দুঃখ আছে
এখন তুমিও কষ্ট পাও অঝোরে বৃষ্টি ঝরলে ,
আনমনে জানালার পাশে দাড়িয়ে ডুবে যাও অদূরে ;
অবিরাম বৃষ্টির ধারায় খুঁজে ফেরো অনেক প্রশ্নের উত্তর ...
সরল ,গড়ল , পাওয়া না পাওয়ার আরও অনেক
পার্থিব অথবা অপার্থিব প্রশ্ন এসে তোমার মনের জানালায় উঁকি দেয় ,
আকাশের মত তুমিও কষ্ট পাও , মনের আকাশে জমে কালো মেঘ
তোমারও চোখের কার্নিশ গড়িয়ে ঝরে অঝোর শ্রাবণ ।
শুধু আজ আমি আর নেই তোমার পাশে ...
সময়ের ব্যবধানে আমাদের গন্তব্যরা হারিয়েছে ঠিকানা
খোলা জানালা , অবিরাম বৃষ্টি সব কিছু আগের মতই এখনো ,
রদ-বদলের স্রোতে ভেসে গেছি শুধু আমরা দুজনে ।
জানালার গ্রিল ধরে একা একা এখন তোমার বৃষ্টি দেখো
আর অদূর অতীতের ম্রিয়মাণ ভাবনার অতলে ডুবে যাও ,
জানালার পাশে একা একা আমার পাথরের মত দাড়িয়ে থাকা
হাত বাড়িয়ে আর ছুঁয়ে দেখা হয়না আকাশের জল রঙা কান্না ,
এখন তুমি বেশ ভালোই জানো বৃষ্টি রহস্য , চিনতে শিখেছ
বৃষ্টির জল রঙ , কালো মেঘদের অর্থ ।
নির্জন আহমেদ অরণ্য
অনন্ত বাসনা
আমি আমার সব ভুল গুলো আগলে রাখবো অনন্ত কাল
শুধু তোমাকে চাওয়ায় আমার কোন কৃপণতা থাকবে না কখনো ...
আমি এমন হাজার টা ভুল করতে পারি শুধু
পারিনা কোন কিছুর বিনিময়ে তোমাকে হারাতে ।
আমাকে ঘৃণা করো , আমাকে অভিশাপ দাও
আমাকে বিশ্বাস করোনা কখনো , শুধু আমায় ভেবে
কখনো এক বিন্দু জল ঝরিয়ো না ভুলে ।
কিছুইতো চাইনি তোমার কাছে , শুধু কণা টুকু চেয়েছি
এই কণা টুকু নিয়ে আমাকে বাঁচতে দাও ।।
আমার এই ভুল গুলোর অন্তরালে কি যে যন্ত্রণা জড়িয়ে
তা কখনো তুমি জানতে চেয় না ...
শুধু আমাকে অভিশাপ দাও , আমাকে ঘৃণা দাও
অবিশ্বাসের দায় ভার এবং পাপ অ দুঃখে আমাকে তলিয়ে যেতে দাও ।
স্বার্থপরের মত আমি আমাকে নিয়ে ভেবেছি শুধু
ভাবিনি তোমার কথা , ভাবিনি তোমার অবধারিত মহাপ্রলয় ,
আমি এমন স্বার্থপরের মতোই আজন্ম তোমাকেই চাইবো
আমার জন্য আমি তোমাকে চাইবো ;
ঘৃণা , অভিশাপ অথবা অবিশ্বাসের ঝরে আমাকে যতই ক্ষতবিক্ষত করো
আমি বসন্তের নির্মলতা নিয়ে ফিরে আসব বার বার ...
এইতো আমার সুখ , আমার ভালবাসার নির্জন সাক্ষর
আমার বেঁচে থাকার প্রয়াস ।
তুমি শুধু আমাকে ঘৃণা টুকু দিও , অভিশাপ দিও
পাপ আর দুঃখে আমাকে হারিয়ে যেতে দিও নীরবে ।
নির্জন আহমেদ অরণ্য
আকাশ কে খোলা চিঠি
প্রিয়
আকাশ ...
তোমাকে আকাশ বলেই ডাকলাম বিশেষ একটা কাড়নে । কারণটা তোমার খুবই পরিচিত । তাই আর এ নিয়ে তেমন কিছু বলার অভিপ্রায় রইল না ।
কেমন আছ তুমি এই শিশির ভেজা সকালে ? ভাল আছ তো ? নাকি এখনও
মন খারাপ করা সেই সব কথার পাণ্ডুলিপি খুলে ডুবে আছ ভাবনার গভীরে ?
আকাশ , প্রিয় আকাশ কি হবে এত ভেবে বল আর এই অবেলায় ? এই গল্পের যে কোন শেষ নেই ... বহমান নদীর মত ছুটে চলবেই অনন্ত কাল , এ নদীর কোন মৃত্যু নেই , কোন শেষ নেই ...। তবুও তো মেনে নিতে হয় কিছু অনাদায়ী ঋণ , জানি আজ তুমিও শূন্য আমিও শূন্য । না হয় আরও একটি গল্পের ইতি টানা গেল না এই পৃথিবীর মিলন মেলায় ।
জানো ... বহুদিন দেখা হয়নি আমার আকাশ,দিনের আলোয় নীল আকাশ ।
তুমি চলে যাওয়ার পর নিজেকে অনেকটা গুঁটিয়ে নিয়েছি চার দেয়ালের ভিতর , দেখা হয়নি অনেক দিন ফুলের বাগানে অলিদের অবাধ বিচরণ , সর্ষের হলুদ প্রান্তরে মৌ দের সংগ্রামী জীবন ... অথবা সন্ধ্যায় দল বেঁধে পাখীদের নীরে ফেরা , সমস্ত দিনের ক্লান্তি ভুলে নিথর হয়ে পরে থাকা শান্ত নদীর জল । শুধু মায়া লেগে আছে কিছুটা এখনও সেই পাহাড়ি ঝর্ণার জলে , সবুজ ঘাসের প্রান্তরে আর আকাশের সেই অপরূপ নীলাভে । কিছুই ভুলিলি আমি , খুব যত্ন করে তুলে রেখেছি মনের আলমেরাতে তোমায় নিয়ে আমার যত স্মৃতিময় দিন গুলো । অনন্ত কাল আমার আশ্রয়ে লালন হতে থাকবে তোমার রেখে যাওয়া শেষ চিহ্ন টুকু ।
কেন না খুব বেশী কিছু চাইনি কখনও আমি , সীমিত এই জীবনে পরিমিত কিছু চাওয়া ছিল আমার ...। হয়নি কিছুই পাওয়া ... যে কথা গুলো তোমাকে কখনই জানানোর ছিলনা আজ তোমাকে বলবো , কেন না এই বিশেষ কথা গুলো তোমার জানা টা এখন প্রয়োজন ।
আমার ঘরের ভেতর কেন ঘর থাকে না , পাঁজরের অতলে মন ... এই অরণ্য কেন আজ এত টা শূন্য , হৃদয় জুড়ে কিসের দহন ?
এখন আমার ঘরে ফেরার তাড়া থাকে না তেমন , রাত গভীর থেকে হয় আরও গভীর , অন্ধকারের অতলে ডুবে যায় আমার অবহেলিত জীবন ; আমার জন্য কেউ অপেক্ষায় থাকে না , ভেতর থেকে দরজা খুলে দেবার জন্য কেউ বসে থাকবেনা জানি আর কোন দিন ...
প্রিয় আকাশ জানি এই চিঠি তুমি পাবে কোন একদিন ... কাড়ন আমার ভালবাসার উদ্যম দ্যুতি তোমাকে আমার কাছে টেনে আনবে বার বার ... একই আকাশের নিচে আমাদের ঠিকানা , বৃত্তের বলয় যেমন ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে কেন্দ্রের টানে ঠিক তেমন করেই তুমিও ফিরে আসবে পরিচিত এই নির্জন অরণ্য ঠিকানায় । তুমি জানও খুব ভাল করেই আমার ঠিকানা একটাই ।
আকাশ , প্রিয় আকাশ ... আমায় বলেছিলে তুমি , যখন তোমার কথা খুব মনে পরবে তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে আমি একা নই , তুমি আছ... তুমি আছ আমার খুব কাছেই ।
আজ খুব বেশি মনে পরছে তোমায় ... তমাকে এক পলক দেখার জন্য কি করে যে রাত কে করেছি ভোর তা শুধু আমিই জানি । বিছানায় শুধু এপাশ ওপাশ করে কাটিয়েছি ভোরের আলোর প্রতীক্ষায় । যখন আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ করে সোনালী রোদের ঝিলিক উঁকি দিল জানালার গ্রিলে , আমি পাগলের মত ছুটে গিয়েছিলাম আকাশের কাছে ... তোমার কাছে ...। এই কি আমার আকাশ ! এত দূরে থাকে আমার আকাশ , ইচ্ছে করলেও আজ আর ছুঁয়ে দেখতে পারিনা আমার অভিশপ্ত দুটি হাতে ।। আমার পৃথিবী তখন অন্ধকারে তলিয়ে যায় ... এক ভয়ানক ভূমিকম্পে আমার অস্তিত্ব হারিয়ে যায় নীরবে ।
মাঝে মাঝে আমার খুব ইচ্ছে হয় নদী হয়ে যেতে , সেই সন্ধ্যার শান্ত নিথর নদীর মত আমারও ইচ্ছে হয় আকাশের ছবি বুকে ধরে রাখতে ...।। সব পাপ আর পিছুটান মুছে তোমাকে আমার বুকের মাঝে আগলে রাখতে ...।। আমি ভুলে যাই মাঝে মাঝে এ আমার শুধু আমার একান্ত ভাবনা , যা রাত্রির অন্ধকারে ডুবে গেছে অনেক আগেই ...। আর আমার জন্য রেখে গেছে অনন্ত অপেক্ষা ...।।
ভাল থেক আকাশ , তুমি ভাল থাকলেই যে আমি ভাল থাকব ... তুমি দূর থেকে এভাবেই থেক আমার আকাশ হয়ে অনন্ত কাল ...।
তোমারই অরণ্য
ইতি
মনে রেখো
মনে রেখো শুধু মনে রেখো
এমন করেই মনে রেখো অনন্ত কাল ,
যে ফুল ঝরে গেছে একদিন অতীতের কোন ভুলে
এমন করেই তুলে রেখো সে ফুল
সৃতির খাতার ভাঁজে ।
যে প্রেম পায়নি প্রাণ , দুই হৃদয়ের মাঝে
গড়েছে ব্যথার দেয়াল ,
সেই প্রেম তুমি অঞ্জলি করে চোখে রেখো
মনে রেখো , এমন করেই মনে রেখো
আমায় অনন্ত কাল ।
শুধু তুমি ভাল থেকো যেখানেই থাকো
যত দূরে থাকো ,
মনে রেখো যে আকাশের নিচে তুমি থাকো
একই আকাশের নিচে আমিও যে থাকি ;
তুমি ভাল থাকলে আমিও যে ভাল থাকি ।
যে শ্রাবণের জল তোমার অঙ্গনে ঝরে
ছুঁয়ে যায় নীরবে তোমার অধর
মনে রেখ একই জলে আমিও ভিজে
নিজেকে করি শীতল ;
যে বাতাসে তুমি উড়িয়ে দাও আঁচল
খোঁপার বাঁধন খুলে ছড়িয়ে দাও সুবিন্যস্ত চুল
মনে রেখো সেই বাতাসে আমিও যে পাই প্রাণ
বেঁচে থাকি , আমি বেঁচে থাকি
আমার ফুসফুসে বহে তোমারই দান ।
মনে রেখো শুধু মনে রেখো
এমন করেই মনে রেখো আমায় অনন্ত কাল ।।
নির্জন আহমেদ অরণ্য
Subscribe to:
Posts (Atom)