একদিন তুমি আর আমি


একদিন তোমাকে আমি 

কাঁচা ফুলে সাজাঁবো...

খোঁপাতে পরাবো 
কাঠ বেলীর মালা,
কানের পাশে গুজে দেবো
রক্ত করবী.....
মেহেদী রাঙা হাতে
বকুল ফুলের কঙ্কন
আর আলতা রাঙা পায়ে
পরাবো নূপুর.......
শেফালী ফুলের এক জোড়া
দুষ্ট দুল.......আর
হাসনা হেনার নাক ফুল......
লাল পেড়ে সাদা শাড়ি
পরবে তুমি........
আর আমি,
আমি পরবো নীল জামা ,
ঠিক আকাশের মতো নীল....
তার পর নদী তীরে
হাতে হাত রেখে
ছুটো ছুটি কাশবনে...........
শেষ বিকেলের বাসন্তী আকাশ
জানান দিবে ঘরে ফেরার কথা.
কিন্তু ......
কিন্তু আমরা ফিরবোনা....
অবিরল গল্প করে যাবো
চোখে চোখ রেখে...........
এক সময় .......
শান্ত নিথর ঘুমিয়ে পরা
নদীর জলে ঢেউ তুলবো
ঢিঁল ছুড়ে......
দু চোখ মেলে দেখবো
পাখিদের নীড়ে ফেরা......
সেই দিন হবেনা আর
আমাদের ঘরে ফেরা......... ।



নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

অধঁরা এবং আমার ভালোবাসা


অধঁরা এবং আমার ভালোবাসা









যে অরন্য আধাঁর কে
আপন করে নিয়েছে তাকে কি
আজ চিনতে পারছো...অধঁরা ?
তোমাকে হারিয়ে আধাঁর কে
করেছি আপন...........
কিন্তু সেখানে
মায়াজাঁলে বাঁধা পরে আছে
অনন্ত নীল আকাশ....
শুধুই আলেয়ার লুকোচুরি...
অধঁরা কান পেতে শুনো
যেভাবে কান পেতে শুনা যায়
শাঁখের গায়ে সমু্দ্রের গর্জন...
সে ভাবে কান পেতে দেখ
এই অরণ্যের বুকে...
যেখানে হৃদয় থাকে....
কি... শুনতে পারছো...?
এক ভয়ানক গর্জন....
কেউটের মতোই ফুসে ওঠে
ক্ষনে ক্ষনে.....
ভালোবাসা তো এই অরণ্য জীবনে
এক মরিচিকা......
আর আমি........
আমি তো এক তৃষ্ণার্ত মরুচারী
ক্লান্ত....বড় বেশি ক্লান্ত....
অধঁরা ভালোবাসার মানে
আমি জানিনা..
ভালো লাগে অনেক কিছুই
তবুও মুখ খুলে বলতে পারিনা..
জানিনা কেন যেন
এক অজানা সংসয়
আমাকে তিলে তিলে
আকড়ে ধরেছে অক্টপাসের মতো...
হারানোর ভয়....
তাই ভালোলাগা গুলোকে
গুটিয়ে সুটিয়ে বন্ধ করে রাখি
মনের গোপন ঘরে....
বলতেও পারিনা ..
বোঝাতেও পারিনা.....
বুকের ভেতরে
আজ কাল তারা বিদ্রহ
করছে আমার মনের বিগ্রহে.......
আর অবচেতন মন
আমাকে ঠেলে দিচ্ছে
অন্ধকারে............
আমি হারিয়ে যাচ্ছি.
আমি তলিয়ে যাচ্ছি....
জানো অধঁরা.....
মনের ভেতরে যে,স্বপ্ন থাকে
সেটা ভেঙ্গে গেছে অনেক আগেই.....
জোরা লাগাতে লাগাতে আমি ক্লান্ত
কিন্তু স্বপ্ন গুলো আর জোরা লাগেনি
এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
এ কোন সে কোন জুড়ে......
আর তুমি আমায়
ভালোবাসার কথা বলো.......!
যেখানে অনুভূতি গুলো
বরফ শীতল হয়ে জমে আছে
সেখানে গলনের সৃষ্টি হয়েছে আজ কাল,
বেশ অনুভব করতে পারি....
এক প্রবল স্পৃহা আমাকে টেনে নিয়ে যায়
তোমার কাছে......
এর নাম কি দেব আমি...?
ভালোবাসা .......নাকি
ভোগের আদীম্য নেশা....?
একটা নাম না হয় তুমি ই
দিয়ে দিও........
এ সম্পর্কের নাম দিতে গিয়ে
যে সুতোয় ফুল গেথে গেথে
রুপ দিতে গিয়েছিলুম মালার,
সে সুতো বার বার ছিড়ে গেছে.......
ফুল গুলো শুকিয়ে গেছে...
হয়তো তুমি কখনো বুঝবেনা
কি ছিলো অরণ্য বাসনা...
কোন দাহনে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
এই অরণ্য, দিনের পর দিন
রাতের পর রাত.......
তবুও তোমার সামনে কখনো
ভালোবাসার অধিকার নিয়ে
দারাবোনা.............
একা ..একা একদিন এভাবেই
হারিয়ে যাবো ঐ নীল আকাশের
অন্তরালে........
তার পর বিষাদের কালো মেঘে ঢেঁকে যাবে
নীল আকাশ..........
বৃষ্টি হয়ে ঝরে মিলিয়ে যাবো ধরাতে....।


নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

চলে যাচ্ছি


চলে যাচ্ছি

আমি চলে যাচ্ছি............
আমি চলে যাচ্ছি তোমার যতো বাঁধন
ছিন্ন করে.....
ঝর উঠেছে আজ .....
মনের শান্ত নিথর নদীতে ঝর উঠেছে...
উত্তাল ঢেউ আর মাতাল স্রোতের গ্রাসে
ধিরে ধিরে হারিয়ে যাচ্ছে
তোমার ভালোবাসার বেলাভূমি......
শুধু তুমি জানলেনা ...
তুমি জানলেনা কতোটা দহনে পুড়ে গেছে মন
ভেঙ্গেছে কতোটা আঘাতে...
আঘাতের পর আঘাতে ক্ষত বিক্ষত
টুকরো টুকরো ,ছিন্ন ভিন্ন... আহত হৃদয়...
তুমি বুঝলেনা....
অথচ........
অথচ হাত বাড়ালেই ছিলো
তোমার চোখের সামনে পরে এক শান্ত যমুনা...
অপেক্ষার পর অপেক্ষা করে করে
শুকিয়ে গেছে চৈতালী কষ্টে....
আবার বৃষ্টির কাছ থেকে জল ধার করে
নিজেকে করেছে কানায় কানায় পূর্ণ.....
তুমি নতুন জলে স্নান করবে বলে,
আশায় আশায় কতো যে, বসন্ত গেছে চলে..
শুধু তুমি আসলেনা......ভালোবাসলেনা...
তোমার ভালোবাসা পাবার জন্যে
ভেসে গেছি কতো দূরে..........
তুমি বুঝলেনা..............
তাই আজ তোমার যত ঋন শোধ করে
চলে যাচ্ছি তোমার কাছ থেকে অনেক দূরে...
তুমুল ঝরে লন্ডভন্ড হচ্ছে তোমার
ফেলে যাওয়া স্মৃতি...ক্ষয়ে যাচ্ছি আমি...
হারিয়ে যাচ্ছি চীরতরে
গভির থেকে গভিরে
অতল তলে.............।



নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

ভালো লাগে


আমার ভালো লাগে নীল আকাশ

নীলে নীলে নীলাকার........

ভালো লাগে...

অনেক উপরে, তারও উপরে
ক্লান্তি হীন ভেসে থাকা চীল গুলো...
শরতের আকাশে ভেসে চলা
কালো মেঘের ভেলা.......
অথবা...
নদী তীরে কাশ বন ,
হাওয়ায় হাওয়ায় দোল লাগা.....
ভালো লাগে....
এঁকে বেঁকে চলে যাওয়া নদী
হলুদ বিকেলের শান্ত নিথর জল
ছোট ছোট ঢেউ রাশি রাশি...
বহু পথ বহু বাঁধা পেড়িয়ে
অবশেষে নিজেকে সপে দেয়া
উন্মাদ সমুদ্র বক্ষে
ভালোবাসার সুখকর মিলনে......
আমার ভালো লাগে অন্ধকার...
বিদঘূটে আধাঁরের নির্জনতা,
একা... একা....
নিজেকে নিয়ে থাকা....
অথবা ....
অথবা বিরাম হীন বৃষ্টি ধারা....
সবুজ পাতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে জল ঝরা..
পদ্ম পুকুঁড়ের জলের উপরে
শ্রাবণ জলের অপরুপ নৃত্য খেলা...
আমার ভালো লাগে....
পরন্ত বিকেলের বাসন্তী আকাশ....
আবীর রঙে রাঙা গোধূলি....
ভালো লাগে নীড়ে ফিরে চলা ক্লান্ত পাখি..
অথবা...
অথবা দাওয়ায় বসে দু চোখ মেলে দেখা
কৃষানের নগ্ন পায়ে ধুলি উড়িয়ে
মেঁঠো পথে ঘরে ফেরা .....
ভালো লাগে শীতের সকাল...
দোয়েলের শীষে ঘুম ভাঙ্গা ..
কুয়াশায় ভেঁজা দূর্বা ঘাস
অথবা...
অথবা শর্ষের হলুদ গালিচা..
কিশোরীর আলতা রাঙা পা
মেঘ কালো চুল....
ভালো লাগে....
পথে প্রান্তরে ফুটে থাকা
হাজাড়ও নাম না জানা বুনো ফুল....
ভ্রমরের গুন গুন...
কোকিলের মিষ্টি সুরে গান গাওয়া..
ভালোবাসি পূর্ণিমা রাত
চাঁদের রুপালী জ্যোৎস্না...
অভিমানী রাত শেষে চাঁদটার
একা একা নিরবে ক্ষয়ে যাওয়া...
আর ভালো লাগে ,
দক্ষিনা মৃদূমন্দ হাওয়া..
সুরের লহরী মধু ঝংঙ্কারে
দূরে বহু দূরে ভেসে যাওয়া..... ।


নির্জন আহমেদ অরণ্য





 

অস্তিত্ব হীন


অস্তিত্ব হীন


নিজেকে বদলাতে অনেক চেষ্টা করলাম
পারলাম না.......
সব কিছু ভুলে নিজেকে একটু
সময় দিতে গিয়ে দেখলাম
আমি শূন্য.........আমি অস্তিত্ব হীন.....
তুমি হীনা আমার অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম না ।
মনের এ গলি থেকে ও গলি ছুটে গিয়েছি
নিজেকে একটু একান্ত ভাবে পেতে
খুঁজে...খুঁজে হয়রান হয়েছি ....
কোথাও খুঁজে পাইনি আমার আমিকে.....
স্বার্থপরের মতো তোমার স্মৃতি গুলো ফেলে
উড়তে গিয়েছিলাম নীল আকাশে.....
ভুলেই গিয়েছিলাম যে,
অধঁরা বৃত্তের বাহিরে যাওয়া মানে
নিজেকে হাড়িয়ে ফেলা....
যেমনটি উত্তাল সাগরের বুকে
দিক ভ্রষ্ট ছোট্র একটি ভেলা......
হাড়িয়ে ফেলেছি নিজেকে....
ভাসিয়েছি ভেলা অকূলে.....
কি আমার নিয়তির লিখন
কেবা জানে.........! 


নির্জন আহমেদ অরণ্য