ভালোবাসা


তুমি কি আমায় অনুভব করতে পাচ্ছো....?
এই শ্রাবণের দ্বীপ নেভা মাঝ রাতে...
রিম ঝিম রিম ঝিম ণূপুড়ের ছন্দে
বৃষ্টিরা নৃত্যে মেতেছে যখন অপার আনন্দে...
হিমেল পরষে শিউরে ওঠে তনু ক্ষনে ক্ষনে
অনুভব মিশে আছে তোমার উষ্ণ আলিঙ্গনে ।
আমার বুকে মাথা রেখে বিলি কেটে দিচ্ছো
বুকের কেশে তোমার দুটি চাঁপা আঙ্গুলে...
তোমার গরম নিঃস্বাশ আমার শিরা উপশিরায়
ছড়িয়ে দিচ্ছে পাগল করা অস্থিরতা...
তুমি কি টের পাচ্ছো..........
তুমি কি টের পাচ্ছো তোমার মেঘ কালো চুলের
সিঁতির পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে আমার দুটি আঙ্গুল
তুমি কি টের পাচ্ছো আমার রক্ত কনিকার অস্থিরতা
আমার নিঃস্বাশে উন্মাদ উষ্ণতা..........?
আমি....আমি অনুভব করছি তোমার হৃদয়ের স্পন্দন
সেটা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে পলক ব্যাবধানে...
কান পেতে শোন ঐ আমার হৃদয়ের পানে
ভূমিকম্পের মতো হৃদকম্পন কি মাপা যায় কোন স্কেলে ?
বুঝতে পারছো তুমি .......?
এর নাম ভালোবাসা...আবেগের অনূরাগে
একে অন্যের টানে অশান্ত নদীর মতো ছুটে চলা....।



নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

পাহাড়ি ঝর্ণা


পাহাড়ি ঝর্ণা তুই বেঁচে থাক..
তুই বেঁচে থাক অনন্ত কাল
আহাঃ কি সুখ ই না আজ দিলি
তোর শান্ত শীতল জলে আমায়
স্নান করিয়ে শুদ্ধ করে দিলি...!
শ্রাবণের জল বুকে ধরে রাখিস
পাথরের অলি গলি ধরে তুই
অপরুপ ঝর্ণা হয়ে ঝরিস.....
নিঃস্বার্থ ভাবে তুই কতোনা
পথিক কে তুষ্ট করিস....
আজ আমি শান্ত তোর পরষে
ক্লান্তির রেষ্ নেই এতটুকু দেহে
বহুদিন পর মনে হলো আজ
আমি পরিপূর্ন, আজ আমি তুষ্ট....
এ জল যেন তোর গাঁ থেকে ঝরেনি
অনুভবে ঝরেছে শ্রাবণ জল
আমার প্রিয়ার অধঁর ছুয়ে
আমার শুষ্ক অধঁর যুগলে...!
পাহাড়ি ঝর্ণা তুই বেঁচে থাক..
তুই বেঁচে থাক অনন্ত কাল ।



নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

তবুও আমি


মোমের নিচে অন্ধকার সে কথা জেনেও আমি
নিশিতে মোমের আলো জ্বালি
আলোর পিছে অন্ধকার আলেয়ার লুকোচুরি.....
ভেঙ্গে যাবে বুক সে কথা জেনেও আমি
বার বার আশায় বুক বাঁধি
ভাঙ্গা মন নিয়ে কজন পারে বাচঁতে সে কথা শুধু ভাবি....
দু চোখের কোনে স্বপ্নের বাসা,মন আমার অভিলাসি
স্বপ্ন আমার হয়না পূরন তবুও আমি স্বপ্ন বিলাসি
কল্পনার আকাশে মনের হরষে উড়াই স্বপ্ন ঘুড়ি...
শ্রাবনের কালো মেঘ ঢেঁকে দেয় নীল আকাশ
বৃষ্টির জলে ঝরে যাবে সব-ই সে কথা জেনেও আমি
বেদনার নীল আকাশে ধূসর রঙে আঁকি ছবি....
জয় পরাজয়ে খেলায় পরাজয়ের ভার কাঁধে বেশি
হেরে যাবো জেনেও জীবনের সাথে আজও ধরি বাঁজি
এ খেলা খেলে আজও আমি জীবনের মানে খুজি....
প্রেমের কলা হয়নি জানা ষোলো আনা
তবুও আজও প্রেম সাগর ডুব সাঁতারে দেই পাড়ি
রাখবেনা কথা ধরবেনা হাত হবেনা সাথী তবুও
দেখা হলে বলবো তোমায় ভালোবাসি...!



নির্জন আহমেদ অরণ্য
 

অধঁরা এবং এই আমি


অধঁরা এবং এই আমি



এই পরন্ত শীতের শেষ সকালে
প্রকৃতি নিরবতা ভেঙ্গে নতুন প্রানে
জেগে ওঠার অপেক্ষায় যখন ,
সারা রাত ক্ষয়ে ক্ষয়ে আঁধ ভাঙ্গা চাঁদটা
সব গ্লানি ধুয়ে মুছে নি:শ্বেষ হয়ে যাওয়া
শেষ আস্তিত্ব টুকু ধরে রাখতে 
ধুসর আভার আড়ালে নিজেকে লুকোতে ব্যস্ত তখন.....
থেমে যাওয়া নদীর বহতা আলো আধাঁরের ছবি
আপন বক্ষে ধরে আছে নিবির আলিঙ্গনে...
গাছের পাতা ছুঁয়ে ঝরে যায় শিশির কনা
সারা রাত সুভাস ছড়িয়ে ঝরে পরে হাসনা হেনা...
কি করছো তুমি এমন সময় অধঁরা.....?
আমাকে চিনতে পেরেছ ? আমি...
আমি তোমার অরণ্য..........
যে অরণ্য হাড়িয়ে গিয়োছলো একদিন
ঐ আঁধ ভাঙ্গা চাঁদটার মতো মেঘের আড়ালে
সম্পর্কের সব গুলো সুতো ছিরে........
কি... ঘুম ভেঙ্গেছে তোমার......?
আমি জানি তোমার ঘুম ভেঙ্গেছে অনেক আগেই
শুধু অলস চোখের পাতা দুটি খুলতে ইচ্ছে করছেনা
এপাশ ওপাশ করে চলেছ , অথবা ....
অথবা নিজেকে গেঁথে রেখেছ প্রিয়োজনের বাহু বন্ধনে
যার নাম তুমি জুড়ে নিয়েছো তোমার নামের পাশে....
যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখো এখন ঘুমের ঘোরে...
তোমার পৃথিবী সাঁজাও যার দেয়া রঙধনু রঙে
যার অধঁরে ছুড়ে দাও নিজের অধঁর নিভৃতে.....
সুখেই আছো অধঁরা এই অরণ্য কে ভুলে.....
কতো বার এসেছি তোমার দুয়ারে ফিরে
সাহস হয়নি কখনো তোমাকে আবার ফিরে চাইতে..
কি করে চাইতাম বলো কোন অধিকারে...?
আর চাইলেই কি তুমি পারতে সাঁজানো সংসার ফেলে
ছন্নছাড়া এই অরণ্যের হাত দুটি ধরে চলে আসতে...!
আমার ঘুম নেই অধঁরা....আমার ঘর নেই
আমার সুখ নেই ক্লান্তি নেই, শুধু এক চিলতে 
নীল আকাশ ছাড়া কিছুই নেই আমার.....
সারা রাত দুচোখের পাতা খুলে বসে থাকি
ভয় হয় যদি ঘুমের ঘোরে তোমায় নিয়ে দু:স্বপ্ন দেখি...
অধঁরা..... অধঁরা তুমি বলতে পারো কেন সব কিছু 
এমন করে এলো মেলো হয়ে গেলো...?
আমাদের স্বপ্ন গুলো চাইলেই প্রান পেতে পারতো
চাঁদের রুপালী জ্যোৎস্নায় স্নান করে 
শুদ্ধ হতে পারতুম দুজন দুজনে ভালোবেসে....
কি হতো.....?
কি হতো আর কটা দিন আমার অপেক্ষায় যদি থাকতে....?
আর কেহ জানুক আর নাইবা জানুক তুমিতো জানতে
যে মানুষটা তোমাকে ভালোবেসে হয়েছে ভিখারী
সে মানুষটা একদিন পৃথিবীর সব সুখ বিসর্জন করে 
অবশেষে তোমারি কাছে আসতো ফিরে.......
তোমার ভালোবাসার কাছে নিজেকে উৎস্বর্গ করতে...
অধঁরা.....
আজ তুমি যার তরে তোমার ভালোবাসার লাল গালিচা
বিছিয়ে দাও হৃদয়ের সদর দড়জা খুলে 
নিজেকে তার ভালোবাসার চরন ধুলিতে শুদ্ধ করবে বলে,
লক্ষ করে দেখ কোন একদিন সেই কোমল পশঁমি গালিচার 
নরম পশঁমের ফাঁকে ফাঁকে লাল রক্ত জমে আছে 
কারো হৃদয়ের ক্ষতো থেকে........! 



নির্জন আহমেদ অরণ্য


 

স্পর্ষ


স্পর্ষ


একদিন আমি তোমায় ছোবো
কোন বাঁধাই সেদিন আমায়
পরাজিত করতে পারবেনা
আমাকে আটকে রাখতে পারবেনা
কোনো শক্তি, তোমার কাছে আসতে ।
সেদিন আমি তোমায় প্রান ভরে ভালোবাসবো
কোনো সামাজিক দায়বদ্ধতাও আমাকে দমাতে পারবেনা
আমার ভালোবাসাকে কাঁচের মতো করে
চুর্ণবিচুর্ণ করতে দেবোনা কাউকে আর ,
আমার হৃদয়ে জমে থাকা সবটুকু প্রেম আমি
ঢেলে দেবো তোমার চরন তলে
আমায় কেউ বাঁধা দিওনা সেদিন ভালোবাসতে ।
যদি সেদিন আকাশে মেঘের সমাগম হয়
থেকে থেকে গর্জে ওঠে বিজলি ধ্বনি
ভেবেছো আমি ভয় পাবো ,ঘরে বসে থাকবো
না......
না আমি ভয় পাবোনা তোমার কাছে আসতে
বৃষ্টি ঝরবে ..? ঝরুক না....!
বিজলি পরবে ...? পরুক না...!
অথবা ঝরবে পাথর শীলা , আমি ভয় করিনা
এতো ভয় পেলে কি বলো পারতাম তোমায় ভালোবাসতে ?
যদি তোমাকে স্পর্ষ করতে আমাকে পারি দিতে হয়
উত্তাল সমুদ্র ছোটো ডিঙি নাও বেয়ে
আমি বাইবো সে নাও শক্ত হাতে হাল ধরে...
যদি পারি দিতে হয় তপ্ত মরু নগ্ন দুটি পায়ে
আমি পারি জমাবো তপ্ত মরু বুকে হাঁসি মুখে....
শুধু আর কটা দিন তুমি থেকো অপেক্ষায়
পাথর বুকে ধরে আমার পথ চেয়ে....
বলো যে জন ভালোবেসে হয়েছে ভিখারী
সে কি আর প্রিয়ার কাছে না এসে থাকতে পারে... ?




নির্জন আহমেদ অরণ্য

 

দুটি কবিতা


দুটি কবিতা



(১)

কতোটা স্বার্থপর হলে সুখের সাগরে ভাসা যায়
তা তোমাকে না দেখলে হয়তো কখনোই জানা হতোনা...
জানা হতোনা আরো অনেক কিছুই
কি করে নিজ হাতে স্বপ্ন বুনে আপন মনে তা আবার
সেই হাতেই কতো সহজেই না ভেঙ্গে ফেলা যায়...
শেখা হতোনা হয়তো কখনো জীবনের জটিল অংক
কি করে জোগ বিয়োগের হিসেব মেলাতে হয়.....
আকাশের বুকে জমে থাকা মেঘ থেকে কি করে
বৃষ্টির অনুরন চাইতে হয়....
সেই বৃষ্টির জলে শক্ত মাটিকে ভিজিঁয়ে শশ্য ফলাতে হয়
তার পর শশ্য ঘরে তুলে আবার অনায়াশে বৃষ্টিকে
কি করে অভিশাপ দিতে হয়........

(২)
হয়তো কোন এক আষাঢ়ি ভিষন্ন দুপুরে
বৃষ্টির জল সবুজ পাতা ছুঁয়ে ঝরে যাবে
দাড়ালে খোলা জানালার পানে
আমার স্মৃতি গুলো মনে পরে যাবে আনমনে....
কি সুখ ছিলো এই শ্রাবন জলে
ভালোবেসে কে খোঁপায় গেঁথে দিয়েছিলো
বর্ষার প্রথম কদঁম ফুল এনে....
হয়তো সে দিন গুলো ঝরে গেছে
ঝরে যাওয়া শ্রবনের জলের সাথে....
ক্ষয়ে গেছে দিন গুলো জীবনের খাতা থেকে
ভালোবাসাকি বলো ক্ষয়ে যায় কখনো
মরনের পরে.........?



নির্জন আহমেদ অরণ্য